সংস্থার আয়ের উৎস ও অনুদান

সংস্থার আয়ের উৎস

১. সদস্যদের মাসিক চাঁদা

২. দাতা সদস্যদের মাসিক চাঁদা

৩. দাতাদের এককালীন অনুদান

৪. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পভিত্তিক অনুদান

৫. ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের ধর্মীয় ( যাকাত) অনুদান

৬. দেশি/বিদেশী দাতা সংস্থার প্রকল্পভিত্তিক অনুদান ( এখনও পাওয়া যায়নি}।

সংস্থার অর্জিত অর্থের ব্যয়ঃ

 মূলত ব্যয়ের খাত দুইটি

১. সংস্থার পরিচালনা ব্যয় ২. আর্তমানবতার সেবায় গৃহিত প্রকল্পসমূহের জন্য ব্যয়

সংস্থার পরিচালনা ব্যয়ঃ কাগজ,কলম, ফরম, অফিস ফার্নিচার, সহযোগিতা কার্ড ছাপানো, সভাসেমিনার, অতিথি অপ্যায়ন  প্রভৃতি ব্যয় সদস্য ও দাতা সদস্যদের মাসিক চাঁদা থেকেই নির্বাহ করা হয়। ভবিষ্যতে সংস্থার আয়তন বৃদ্ধি পেলে এবং সদস্য ও দাতা সদস্যদের মাসিক চাঁদায় সংস্থার পরিচালনা ব্যয় নির্বাহ করা অসম্ভব হয়ে গেলে সম্মানিত উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষক ও ধর্মীয় বিশারদদের পরামর্শ ক্রমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

আর্তমানবতার সেবায় গৃহিত প্রকল্পসমূহের জন্যে ব্যয়ঃ সরকারী অনুদান প্রাপ্ত প্রকল্প ছাড়া বাকি প্রকল্পগুলোর ব্যয় নির্বাহ করা হয় সম্মানিত দাতাদের এককালীন অনুদান ও ধর্মীয় (যাকাত) অনুদানের অর্থ থেকে। সংস্থার সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক সদস্যদের সমন্বয়ের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত সমস্ত কর্মকান্ডই স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতেই করা হচ্ছে। ভবিষ্যতেও বিশেষ প্রয়োজন ব্যতিরেকে প্রত্যেক এলাকার সমাজসেবিদের নিয়ে স্বেচ্ছশ্রমের ভিত্তিতেই সমস্ত কর্মকান্ড স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতেই করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সংস্থার আয়তন বিবেচনায়  বিশেষ প্রয়োজনে অফিস পরিচালনার স্বার্থে সার্বক্ষণিক কর্মী নিয়োগ করার প্রয়োজন দেখা দিলে সম্মানিত উপদেষ্টা পৃষ্ঠপোষক ও ধর্মীয় বিশারদদের সাথে পরামর্শ করে নিবন্ধন কতৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে তা করা হবে। 

ধর্মীয় দানের ( যাকাত) অর্থ আর্তমানবতার সেবায় প্রতিষ্ঠিত সংগঠনে দেয়ার প্রয়োজনীয়তাঃ

বর্তমানে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। ফলস্বরূপ বিদেশী দাতা সংস্থাগুলো তাদের হাত গুটিয়ে নিয়ে তাদের আদর্শ ও দর্শন বাস্তবায়নের জন্যে বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে অনুদান দিচ্ছে। যা কোনোভাবেই আর্তমানবতার সেবায় ব্যয় করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এনজিও গুলো তাদের কর্মকান্ড গুটিয়ে নিয়েছে।  বাংলাদেশ সরকার অবশ্য পিছিয়ে পড়া মানুষদের সহযোগিতার ক্ষেত্র অনেকাংশেই বাড়িয়েছে। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় এখনও অপ্রতুল। এই অবস্থায় দেশিয় দাতাদের ব্যক্তিগত দানের অর্থ থেকেই পিছিয়ে পড়া এবং অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।

প্রত্যেক মুসলিমের জন্যেই যাকাত আদায় ধর্মীয়ভাবে বাধ্যতামূলক। একটা সময় রাষ্ট্রীয়ভাবেও বাধ্যতামূলক ছিল। রাষ্ট্রই তখন যাকাত আদায় করতো এবং সিংহভাগ উন্নয়নই করা হতো যাকাতের অর্থ থেকে। অর্থাৎ রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্যে যাকাতের অর্থ বিশেষ ভ‚মিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। আর পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমাণের উন্নয়ন মানেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন। এই অবস্থায় সঠিক ও আস্থাশীল সংগঠনে দেশীয় দাতা বিশেষ করে যাকাতের অর্থ দান করে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসা একান্ত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে নিজস্ব সংষ্কৃতি ও ধর্মীয় চেতনা বজায় রেখে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জাতীয় উন্নয়নে শরিক করার সুযোগ রয়েছে।

সঠিক সংগঠন ও পরিকল্পনার অভাবঃ

একথা বললেই হবে, আমাদের দেশে যাকাতের অর্থ সঠিক পরিকল্পনার সাথে ব্যয় হচ্ছে না। বিষয়টি কেউ কেউ অনুভব করছেন এবং ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টাও করছেন। অনেক শিল্পপতিদের নিজস্ব চ্যারিটেবল ফান্ড ও সংগঠন রয়েছে।

 কিন্তু ব্যক্তি উদ্যোগ একটা সীমিত পরিসরেই ভ‚মিকা রাখতে পারে। বৃহত্তর পরিসরে ভ‚মিকা রাখতে হলে দরকার সামষ্টিক উদ্যোগবিশিষ্ট সংগঠন। এতে করে অনেক মানুষের অল্প অল্প অর্থ মিলেও একটা বড় অংকের অর্থের যোগান আসা সম্ভব। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, এরকম আস্থাশীল সংগঠনেরও যথেষ্ঠ অভাব রয়েছে।

মায়ের মমতা কল্যাণ সংস্থা কেন আপনি বেছে নিবেন?

 আমরা দীর্ঘদিন ধরে আস্থার সাথে কাজ করে আসছি। অবশ্য আমাদের পরিসর খুব বড় না। কিন্তু আমাদের পরিচিত বলয়ে আমরা আস্থা আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের যারা জানেন তাঁরা সপ্রনোদিত হয়েই আমাদের ফান্ডে টাকা দিচ্ছেন। এছাড়া এটি একটি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। সরকারের নিবন্ধন কতৃপক্ষ প্রতিবছর সংস্থা পরিদর্শন করে নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রদান করেন।

এছাড়া আমাদের কাজের ধারা অন্যদের চাইতে ভিন্ন। স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের অনেক সংগঠন আস্থার সাথে কাজ করছে এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। তবে তাদের কর্মসূচীগুলো বেশিরভাগই প্রচারণামূলক ও তাৎক্ষণিক। আমরা শুরু থেকেই প্রচারণামূলক কর্মসূচী পরিহার করে আসছি। তবে আমরা প্রচারণামূলক কর্মসূচীর বিরোধী নই। অবশ্যই তারা ভাল কাজ করছেন। প্রচারণামূলক কর্মসূচীতে অল্প টাকায় অধিক মানুষের তাৎক্ষণিক সুবিধা দিয়ে সহজেই মানুষকে আকর্ষণ করার সুযোগ রয়েছে।  কিন্তু একটা মানুষের জীবন গঠন ও জীবন ধারণের জন্যে দরকার নিবিড় পরিচর্যামূলক কর্মসূচী। আমরা এ কাজটিই করার চেষ্টা শুরু থেকেই করে আসছি। অসহায় মানুষের পাশে থেকে আমরা তাদের একটা আশার জায়গা তৈরি করার চেষ্টা করে আসছি। আমরা বছরের পর বছর তাদের আর্থিক সহযোগিতা দিয়ে তাদের জীবন ধারণ ও জীবন গঠনের চেষ্টা করে আসছি। আমরা প্রতি মাসে নিবিড় ও পরিচর্যামূলক কর্মসূচী বাস্তবায়নে যে খরচ করছি, সেই টাকা খরচ করে অধিক সংখ্যক মানুষের তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মিটিয়ে অনেক বেশি আলোচনায় আসতে পারতাম। কিন্তু আমরা আলোচনায় আসা বা প্রচারণায় থাকার চেয়ে মানুষের জীবন গঠন ও ধারণকে বেশি মূল্যায়ন করে থাকি।

(লেখাটা প্রয়োজনে এডিট/ সংযোজন/ বিয়োজন করা যাবে।)